যা খুজতে চান

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

Popular Posts

About blog

বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন প্রবন্ধ, কবিতা, গল্প ,নাটক ইত্যাদি বিষয় আলোচনা এবং অডিও বই এর মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যকে বাঙালিদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া’ ই আমাদের উদ্দেশ্য,আমাদের তৈরি ভিডিও গুলো আপনাদের উপকারে লাগলে আমাদের শ্রম সার্থক হবে।
বৃহস্পতিবার, ১ জুলাই, ২০২১


“সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি,

সারা দিন আমি যেন ভালো হয়ে চলি।”

“লেখা পড়া করে যে 

গাড়ি ঘোড়া চড়ে সে।

লেখাপড়া যেই জানে 

সবলোকে তারে মানে।”

“পাখি সব করে রব রাতি পোহাইল,

কাননে কুসুমকলি সকলি ফুটিল।”


এমন সব কবিতার স্মৃতি ঘিরে রয়েছে আমাদের ছেলেবেলা, ছেলেবেলায় পাঠ্য অসাধারন এসব কবিতার রচিয়তা মদনমোহন চট্টোপাধ্যায় যাকে আমরা মদনমোহন তর্কালঙ্কার নামেই ‍চিনি, তর্কালঙ্কার হলো তার উপাধি, সংস্কৃত কলেজ থেকে পান্ডিত্যের জন্য তিনি এ উপাধি লাভ করেন। তিনি ১৮১৭ সালে নদীয়া জেলার নাকাশীপাড়ায় বিল্বগ্রামে জন্মগ্রহন করেন, তার পিতার নাম রামধন চট্টোপ্যাধ্যায়।

সংস্কৃত কলেজে পড়ার সময় তার সাথে ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সাথে পরিচয় হয়, ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর তার সহপাঠি এবং বন্ধু ছিলেন। বাংলা বর্ণমালা কতগুলো হবে বা কতগুলো স্বরবর্ণ, ব্যাঞ্জনবর্ণ থাকবে সেক্ষেত্রে ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এবং মদনমোহন তর্কালঙ্কার একত্রে কাজ করেন। সেসময় বাংলায় কোনো ছাপাখানা ছিল না, ১৮৪৭ সালে ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সহায়তায় “সংস্কৃত যন্ত্র” নামে একটি ছাপাখানা প্রতিষ্টা করেন। এ ছাপাখানা থেকে সর্বপ্রথম যে বইটি প্রকাশিত হয় সেটি হলো ভারতচন্দ্র রায়গুনাকরের “অন্নদামঙ্গল কাব্য”; 

কর্মজীবনে মদনমোহন তর্কালঙ্কার হিন্দু কলেজ, ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের অধ্যাপক ও পরে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিযুক্ত হন।

বিধবা বিবাহ আন্দোলনে ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে সবচেয়ে বেশি সমর্থন প্রধানকারী ব্যাক্তি হলেন মদনমোহন তর্কালঙ্কার। ১৮৫৬ সালে বিধবা বিবাহ আইন পাস হলে ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের উদ্যোগে এবং মদনমোহন তর্কালঙ্কারের প্রতক্ষ সহযোগিতায় বাংলার ইতিহাসে প্রথম হিন্দু বিধবা বিবাহ সম্পূর্ন হয়। এ বিবাহের পাত্র ও পাত্রী মদনমোহন তর্কালঙ্কারের ঘনিষ্ট ছিলেন।

মদনমোহন তর্কালঙ্কারের সম্পাদিত বইয়ের সংখা হলো ১৪ টি, এর মধ্যে রসতরঙ্গিনী(১৮৩৬) এবং বাসবদত্তা (১৮৩৬) তার মৌলিক কাব্যগ্রন্থ। এছাড়া তিনিই প্রথম বাংলা ভাষায় ভারতে শিশুদের পাঠ উপযোগী পাঠ্যবই প্রচলন করেন। শিশুশিক্ষা(১৮৪৯ ও ১৮৫৩) নামক এ বইটি কয়েকটি খণ্ডে প্রকাশিত হয়। তিনিই ছিলেন পুরাতন রীতির সর্বশেষ কবি, মদনমোহন সংস্কৃত ভাষায় রচিত বেশ কয়েকখানি গুরুত্বপূর্ন গ্রন্থ সম্পাদনা করেন সেগুলির মধ্যে সংবাদতত্ত্বকৌমুদী, চিন্তামণিদীধিতি, বেদান্তপরিভাষা, কাদম্বরী, কুমারসম্ভম ও মেঘদূত প্রধান। কবি প্রতিভার জন্য তিনি সংস্কৃত কলেজের অধ্যাপকদের কাছ হতে কাব্যরত্নাকর এবং পান্ডিত্যের জন্য তিনি তর্কালঙ্কার উপাধি লাভ করেন।

১৮৫৮ সালের ৯ই মার্চ কলেরা রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। 

0 comments:

Blogger দ্বারা পরিচালিত.